আজকালকার মানুষেরা নিজেদের বিচারে নিজেরাই ঠিক করে নেয়, কারা ভালো আর মন্দ কারা। শুধুমাত্র নিজের, নিজ গোষ্ঠি ও নিজের স্বার্থের মানুষদের ভালো মনে করে, নিজেদের ভালোই মন দিয়ে চায়। যতো দোষ নন্দ ঘোষের মতো অন্যদেরকে খুবই খারাপ ভাবে। ভাবে, তাদের দোষেই দেশ সমাজ মানুষ- সবই যাচ্ছে রসাতলে।
অর্ধশত বছরেরও বেশি সময় ধরে একটা জাতি চোখ থাকিতে অন্ধের মতো। তারা যেটা দেখতে চায় সেটা দেখে, যা দেখতে চায়না- দেখেনা। তারা বোঝেও নিজ নিজ সুবিধামতো। খুশি হওয়া উচিত হবেনা মনে করে খুশি হওয়ার মতো বিষয়েও মুখ ব্যাজার করে থাকে।
স্বার্থপর চিন্তা চরিত্র কারও ভালো ডেকে আনেনা। পিছন ফিরে তাকালে নিজেদের স্বভাবের মন্দ দিকটা স্পষ্ট দেখা যায়। দেশে বিশেষ হয়ে উঠবার একঘেয়ে ফর্মূলা হচ্ছে- আমি ভালো, তুমি খারাপ। দেশটা স্বাধীন হওয়ার পর থেকে যারা যারাই শাসনক্ষমতায় এসেছে- টিকিয়ে রেখেছে ঐ একটাই ভাব, বিশ্বাস, মন্ত্র- আমি ভালো তুমি খারাপ।
একটা জাতি একজীবনে দেখে যেতে পারলোনা, আদর্শ প্রতিষ্ঠার প্রতিজ্ঞা নিয়ে কেউ মানুষের পক্ষ নিয়ে দাঁড়িয়েছে। কালে কালে দেখতে হয়েছে- আমার আপন আর অন্যের পর হও- তাতেই মানুষ তোমার মিলবে মুক্তি।
পর হয়ে, শত্রু বনে, অন্যদের প্রতি ঘৃণার পাহাড় তৈরি করে মুক্তি মেলেনা। শত্রু শত্রু খেলতে খেলতে এখন কে কাকে বন্ধু বলে ভাবতে পারে মানুষ? কে কাকে বিশ্বাস করে? দিনভর যদি দেখতে হয় কারও প্রতি কারও শ্রদ্ধা নেই, ভক্তির প্রয়োজন নেই, পরস্পরকে অসম্মান অমর্যাদা করে আত্মসুখ মিলছে- এসবের কোনোটাই কোনও মানুষের অর্জন নয়।
আমরা দেশের, দল বা গোষ্ঠীর গৌরবে গৌরবান্বিতবোধ করি কিন্তু মানুষ পরিচয়ের গৌরব কিসে, কিভাবে তা অর্জিত হতে পারে- তা নিয়ে ভাবিনা। আমরা জিততে চাই গায়ের জোরে, প্রতিহিংসার তীব্রতা দিয়ে। জিতি। আনন্দ উল্লাস করি কিন্তু জানা হয়না মানুষ থাকছিনা কেউ, রোজ হেরে হেরে ভূত হয়ে যাচ্ছি।হেরেই যাচ্ছি, হেরেই যাচ্ছি।